রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ আগামী ৩ ডিসেম্বর শনিবার। এ গণসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত করতে চায় দলটি। ইতিমধ্যে অনুমতিও পেয়ে গেছে দলটি। আর ওইদিন ভোর থেকেই রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় শুরু হচ্ছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। বিএনপি নেতারা বলছেন, আজ রাতের মধ্যেই দূরের জেলা থেকে নেতাকর্মী চলে আসবেন। কোনো প্রভাব ফেলবে না এ পরিবহন ধর্মঘট। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য মেনে নেওয়া হবে না। বিএনপির সমাবেশ থেকে আপত্তিকর ও মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হলে তা প্রতিহত করা হবে।

বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণসমাবেশের সমন্বয়কারী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, এখনও মাঠের অনুমতি পাওয়া যায়নি। ১ ডিসেম্বর এইচএসসি পরীক্ষা আছে। পরীক্ষার পর থেকে মাঠের অনুমতি পাওয়া যাবে। এটা প্রশাসন থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা ওইদিনই মাঠ প্রস্তুত করে ফেলব। ওইদিন ভোর থেকেই পরিবহন ধর্মঘট থাকায় আমাদের দূরদূরান্তের নেতাকর্মী বুধবার রাতের মধ্যেই রাজশাহীতে চলে আসবে। তারা মাঠে প্রবেশ করবে বৃহস্পতিবার থেকে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, পরিবহন ধর্মঘট কোনো প্রভাব ফেলবে না। আমাদের বাধা দেওয়া হলেও আমরা কোনো সংঘাতে যাব না। এক রাস্তায় বাধা দিলে নেতাকর্মী অন্য রাস্তা দিয়ে গণসমাবেশে আসবে। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা অন্তত ১৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটাব। এর মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চাই যে, এই সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা নাই।

রাজশাহীর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, বৃহস্পতিবার এইচএসসি পরীক্ষা আছে। পরীক্ষার পর বিএনপি নেতাকর্মী হাজী মুহম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রবেশ করতে পারবে। এই সমাবেশ করতে তাদের ১২টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্ত মেনে তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করলে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দেবে।

এদিকে, গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীর মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি। কোনো ধরনের অরাজকতা ও নৈরাজ্য করলে কিংবা মানহানিকর বক্তব্য দিলে তা প্রতিহত করা হবে। সোমবার নগরীর রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘বিএনপির দেশবিরোধী তৎপরতার’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমাদের বক্তব্য পরিস্কার, কোনো রকমের উচ্ছৃঙ্খলতা বরদাশত করব না। বিএনপির উচ্ছৃঙ্খলতা প্রতিরোধে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রেখেছি। উস্কানিমূলক ও মানহানিকর বক্তব্য দিলে তা প্রতিহত করা হবে। তিনি আরও জানান, ১ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিজয় মিছিল করবে আওয়ামী লীগ। এ মিছিলে হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেবেন।

বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে জেলায় জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। নতুন ও পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তারও হচ্ছেন অনেক নেতাকর্মী। মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপির নেতারা। এ ব্যাপারে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি থানায় হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দেওয়া হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। পুলিশ নিজেরাই ককটেল ফাটিয়ে বিস্টেম্ফারক আইনে ও নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার দেখাচ্ছে। তবে এতেও নেতাকর্মী আতঙ্কিত হয়নি। বরং তাদের মাঝে জেদ কাজ করছে। তারা আরও দ্বিগুণ উৎসাহে সমাবেশে আসছে।

রাকিব/এখন সময়